নাটোর(বড়াইগ্রাম)প্রতিনিধিঃ
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই ইউনিয়নের গাড়ফা উত্তরপাড়া গ্রামের জুঁই খাতুন (০৭)বিবস্ত্র মৃতদেহ উদ্ধার করেছে বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ মৃত জুঁই খাতুন মালয়েশিয়া প্রবাসী জাহিরুল ইসলামের মেয়ে গাড়ফা আজেদা নূরানী কিন্ডার গার্ডেন মাদ্রাসার শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী।
সে গত ১৪/০৪/২০২৫ ইং খ্রিষ্টাব্দ সোমবার পহেলা বৈশাখের দিন নতুন জামা পড়ে প্রবাসে থাকা বাবাকে ভিডিও কলে দেখিয়েছিল সাত বছর বয়সী জুঁই। মুখে মেখেছিল নানা প্রসাধনী, খুশি হয়েছিলেন বাবা জাহিরুল ইসলাম। মেয়ে আর বাবার মধ্যে কিছুটা খুনসুঁটি চলার পর কথা শেষ করে সারাদিন ঘোরাঘুরি করে জুঁই। সন্ধ্যায় প্রতিবেশী দাদির বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বের হয় শিশুটি। এরপর থেকে আর কোনো খোঁজ ছিল না।
আজ মঙ্গলবার ১৫/০৪/২৫( এপ্রিল) সকালে পার্শ্ববর্তী পাবনার জেলার চাটমোহর উপজেলা রামপুর বিলের মধ্যে একটি ভুট্টা ক্ষেতের পাশে জুঁই খাতুনের বিবস্ত্র লাশ উদ্ধার করা হয়। মুখে ছিল পোড়া ক্ষতবিক্ষত চিহ্ন। যে মেয়ে নতুন জামা ও সাজুগুজু করে দিনভর হইহুল্লোড়ে মেতেছিল, যে মুখ দেখিয়েছিল বাবাকে। সেই জুঁইয়ের লাশ উদ্ধারে পুরো এলাকার মানুষ শোকে পাথর হয়ে গেছেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় যে, রামপুর বিলের মধ্যে একটি ভুট্টা ক্ষেতে জুঁই খাতুনের বিবস্ত্র লাশ পড়ে আছে। মুখে পোড়া ক্ষতবিক্ষত চিহ্ন, পড়নের প্যান্ট গলায় পেঁচানো। স্থানীয়রা সকালে শিশুটির লাশ দেখতে পেয়ে প্রথমে থানা পুলিশে খবর দেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পৌঁছে পরিবারের লোকজন সনাক্ত করেন যে, যে শিশু কন্যাটি গতকাল নিখোঁজ হয়েছিল মেয়েটি আর কেউ নয় সে মালয়েশিয়া প্রবাসীর কন্যা শিশু কন্যা জুঁই খাতুন।
এ বিষয়ে প্রতিবেশী এমদাদুল হক জানান, স্থানীয় কৃষকেরা সকালে মাঠের কাজে গিয়ে শিশুটিকে ভুট্টা ক্ষেতে পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের লোকজনকে খবর দেয়। এ সময় শিশুটির পড়নে কোন কাপড় ছিলো না। তার মুখমণ্ডল সম্পূর্ণই পোড়া। ধারণা করা হচ্ছে, ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে পাষণ্ড দুর্বৃত্তরা এবং মুখ এসিড দিয়ে ঝলসে দেওয়া হয়েছে। এদিকে শিশুটিকে হত্যার বিভৎসতা দেখে পুরো এলাকা জুড়ে কান্নার রোল পড়ে যায়।
এ বিষয়ে বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান জানান, শিশুটির বাড়ি বড়াইগ্রাম উপজেলার হলেও মৃতদেহটি যেহেতু পাওয়া যায় উপজেলার সীমান্তবর্তী চাটমোহর এলাকায়। যার ফলে সংঘটিত অপরাধটির মামলা চাটমোহর থানায় লিপিবদ্ধ হবে। তবে দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত ও বিচারের আওতায় আনতে বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ যথাযথ দায়িত্ব পালন করবে।
ইতোমধ্যে দুর্বৃত্তদের অনুসন্ধানে পুলিশ মাঠে নেমেছে। হত্যার কারণ বা ধর্ষণের শিকার হয়েছে কিনা তা মৃতদেহ ময়না তদন্তের পর জানা যাবে।জানান বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ।